জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বাড়িয়ে হামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দিনগত রাত সাড়ে ৮টায় রংপুরের সেনপাড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছে জাপা।
সন্ধ্যার পর আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের রংপুরে অবস্থান করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির নেতাকর্মীরা । রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে জীবন বীমা মোড়, গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে অবস্থান নেন সংগঠন দুটির নেতাকর্মীরা।
সেখানে ১০ মিনিটের মতো বৃষ্টিতে ভিজে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা। এক পর্যায়ে নেতাকর্মীরা নগরীর সেনপাড়ায় জাপা প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের বাসায় ইট পাটকেল ছুড়েন এবং জানালার গ্লাস ভেঙ্গে ফেলেন। এই বাড়িতেই থাকেন জিএম কাদের এবং হামলার সময় তিনি ভেতরে ছিলেন। সেখানে কিছুক্ষণ ভাঙচুর চলে। হামলাকারীরা ফিরে যাওয়ার সময় বাসার সামনে থাকা মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
হামলার খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। তাদের সঙ্গে সেখানে হাজির হয় বেশ কিছু জাপা নেতাকর্মী। এ সময় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লেও পরিস্থিতি শান্ত করে পুলিশ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি ইমতিয়াজ ইমতি বলেন, ‘জিএম কাদের রংপুরে অবস্থান করার খবর পেয়ে তাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে আমরা মিছিল করেছি। তবে আমাদের কেউ হামলায় অংশ গ্রহণ করেনি।’
এদিকে এনসিপির নেতারা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দোসর জাপার শীর্ষ নেতা জিএম কাদের রংপুরে অবস্থান করার প্রতিবাদে আমরা মিছিল করেছি। এর বেশি কিছু হয়নি। তবে পরে শুনেছি, উত্তেজিত জনতা তার বাসায় হামলা চালিয়েছে।’
জাপা রংপুর মহানগরের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘হঠাৎ করে আমাদের দলের চেয়ারম্যানের বাসায় হামলা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় দোসর। বিরোধী দলের যাবতীয় সুবিধা ভোগ করে আওয়ামী লীগকে সরকারি দলের বৈধতা দিয়েছিল এই জাতীয় পার্টি।’
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।
পোস্টে সারজিস লেখেন, ‘প্রত্যেক ইলেকশনের আগে অবৈধ সরকারি দলের বিরোধিতার নামে ভন্ডামি করতো। তারপর নির্বাচনের ঠিক কয়েকদিন আগে জিএম কাদের ভারতে গিয়ে নেগোসিয়েশন করে ডামী বিরোধী দল সেজে বসে থাকতো।’
সারজিস প্রশ্ন রাখেন, ‘সেই জিএম কাদের এখনো বাইরে কীভাবে? সরকারকে ধাক্কা না দিলে কি কাজ হয় না? নাকি প্রত্যেকটা কাজের জন্য ছাত্র-জনতাকে নতুন করে মাঠে নামতে হবে?’
খুলনা গেজেট/এমএনএস